স্টাফ রিপোর্টারঃ
নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ী ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলী উসমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রায় এক ডজন অভিযোগ উঠেছে।
এসব অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অতিষ্ঠ হয়ে রোববার (১২ অক্টোবর) মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি ও নেত্রকোণার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন একই মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান।
অভিযোগে বলেন, আলী উসমান ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে রয়েছেন। টানা পাঁচ বছরে ধরে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। ফলে শিক্ষক, কর্মচারী ও কমিটির সদস্যদের মধ্যে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। বিধি অনুযায়ী এক বছরের মধ্যে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগের কথা থাকলেও তিনি তা না করে নিজের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করেছেন এবং বিতর্কিতভাবে তিনজন কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানের অর্থ ব্যবস্থাপনায় অস্বচ্ছতা দেখাচ্ছেন। বারবার অনুরোধের পরও আয়-ব্যয়ের হিসাব দিচ্ছেন না। কোন ব্যাংক হিসাব ব্যবহার না করে নিজ হাতে প্রতিষ্ঠানের অর্থ রাখছেন। গঠিত অডিট কমিটির রিপোর্টও এক বছরের বেশি সময় ধরে পেশ করা হয়নি।
এছাড়া, সম্প্রতি মাদ্রাসার গভর্নিং বডির শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন বিধি বহির্ভূতভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষকদের সম্মানি ও বাড়িভাড়া গত ছয় মাস ধরে পরিশোধ করছেন না এবং প্রভিডেন্ট ফান্ড বাস্তবায়নে চরম করছেন গাফিলতি। উন্নয়ন কমিটিকে উপেক্ষা করে এককভাবে সিদ্ধান্ত নেন এবং মাদ্রাসার সভাপতিকে না জানিয়ে প্রতিষ্ঠানের পুকুর ইজারার চেষ্টা করার অভিযোগও আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, মাদ্রাসায় ১২ জন শিক্ষকের শূন্য পদ থাকা সত্ত্বেও নতুন শিক্ষক নিয়োগে অনীহা দেখানোয় শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দরিদ্র তহবিল গঠন, মুভমেন্ট রেজিস্টার ব্যবহার ও অডিট রিপোর্ট দাখিলেও অবহেলা করছেন। সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটি কার্যত বিশৃঙ্খলার মধ্যে ফেলেছে ওই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।
অভিযোগকারী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের একক কর্তৃত্বে মাদ্রাসাটি আজ নীতিহীনভাবে পরিচালিত হচ্ছে। নানান অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন তিনি। বিষয়টি দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলী উসমান বলেন, তার বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগগুলো সঠিক নয়।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি ও নেত্রকোণার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুখময় রায় বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত অভিযোগটির তদন্তের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।